নিজস্ব প্রতিবেদক:

মুন্সিগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নৌ-পুলিশের কাছে দেয়া ভুয়া লিখিত অভিযোগ,প্রত্যাহারের বিনিময়ে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে, সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পক্ষে,অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকার কদমতলী থানায় একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বেশ কয়েকজন।

ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ পত্রের সূত্রে জানা গেছে,বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য এস এম আনিসুর রহমান খোকন (৫০), রাজধানীর হাতিরঝিল নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে সূচনা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী ও নৌযান ব্যবসায়ী,গোলাম কিবরিয়া মিয়াজির,বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া মিয়াজি লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে মুঠফোনের মাধ্যমে আনিসুর রহমান খোকনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি,সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে দেখা করার কথা জানান।

এরপর বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাথে গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উত্তর চর-বানিয়াল এলাকায় দেখা করতে যান ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া মিয়াজির ভাতিজা মেহেদী উদয় মিয়াজী (২২) ও সূচনা এন্টারপ্রাইজের হিসাবরক্ষক সিহাব সিকদার সহ আরও বেশ কয়েকজন।

এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুর রহমান খোকন সহ তার লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হয় উদয় মিয়াজী ও সিহাব সিকদার পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসায় নিয়ে ঢাকায় ফিরে রাতেই রাজধানীর কদমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে হামলাকারীরা আহত ভুক্তভোগীদের সাথে থাকা দুটি মোবাইল ফোন সহ নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও আহতরা।

এদিকে চাঁদা দাবি বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া মিয়াজির সাথে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোন তিনি বলেন,একটি পক্ষ সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য,সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অবৈধ চাঁদা আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর হাতিরঝিল নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে ভুয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পরবর্তীতে অভিযোগের কপি আমার মুঠোফোনে পাঠিয়ে মোবাইলে কল দিয়ে,প্রায় পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। (এই ফোন কলের কথোপকথনের রেকর্ডিং আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে) এ সময় টাকার বিনিময়ে নৌ-পুলিশের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগ, প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় মোবাইল ফোনে আমাকে।

এছাড়া টাকা না দিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নানাভাবে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
আমি এ ঘটনায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে,দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে বিষয়টি অস্বীকার করে,অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা, এস এস আনিছুর রহমান খোকন, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার প্রয়োজন নেই জানিয়ে প্রথমে মুঠোর ফোনে দেয়া কলটি কেটে দেন। পরবর্তীতে আবার কল দিয়ে প্রতিবেদকের নাম পরিচয় জানেন এবং প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সবকিছু করছেন বলে দাবি করেন। সাংবাদিকদের চাহিদা ও পূরণ করার কথা জানান।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে, রাজধানীর কদমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আইয়ুব বলেন,লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

এছাড়া লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন, মুন্সিগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল আলম।